প্রসংগঃ মুসাফিরের নামাজ (জুমুআ')
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৫ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:২৩:৪২ বিকাল
গাবতলি থেকে সকাল আটটার বাসে উঠল মাহমুদ।
গন্তব্য চট্টগ্রাম। অনেক দিন পরে যাচ্ছে। তা প্রায় বছরখানেক তো হবেই। ওর শ্বশুরের বাড়ি চাটগাতে। এবার অবশ্য একাই যাচ্ছে। তাও অফিসের কাজে। এক ঢিলে দুই পাখি মারছে সে। রথ দেখা হবে, আবার কলাও বেচা হবে।
৪৫ সীটের নন এসি গাড়ি। বিভিন্ন ধরণের মানুষ ওর সহযাত্রী। বিভিন্ন বয়সের। যুবক, বৃদ্ধ, নারী-শিশু সকলেই রয়েছে। ড্রাইভার মানুষটিকে বেশ রাশভারী লাগলো মাহমুদের কাছে। মাহমুদ A-1 সীটে বসেছে। একাকী জার্ণিতে ওর প্রিয় সীট এটি। ওর পাশের সীটে পঁচিশোর্ধ এক যুবক। গাড়িতে উঠেই সেই যে কানে হেডফোন ঢুকিয়ে গান শুনছে, এইমাত্র কাঁচপুর ব্রীজ পার হয়ে এসেছে গাড়ি, এখনো গান শুনছে। মনে হয় চার্জ থাকলে পুরো পথই সে গান শুনবে।
এই পর্যন্ত আসতেই পৌনে বারটা বেজে গেছে। যদিও আজ শুক্রবার, পথের ট্রাফিক জ্যামের তাতে কোনো হেরফের নেই। গুলিস্থান পর্যন্ত আসতেই অনেকক্ষণ জ্যামে আটকে থাকতে হয়েছে। এরপর যাত্রাবাড়িতে। চিটাগং রোড পার হয়েই রাস্তা মোটামুটি ফাঁকা পেয়েই ড্রাইভার গাড়ি টান দিলো। দু'পাশের সবুজ দ্রুত পিছনের দিকে ছুটে চলল... আর উন্মাতাল বাতাস তার ভালোলাগার ছোঁয়া দিয়ে যেতে থাকে যাত্রীদেরকে।
সাড়ে বারোটা বেজে গেছে। মাহমুদ ওর ডানপাশে ড্রাইভিং সীটে গাড়ি ড্রাইভরত চালকের দিকে তাকায়। একটু ভাবে। পরক্ষণেই সুপারভাইজারকে ডাকে। সে এলে বলে,
: 'আজ শুক্রবার। সুবিধামত যায়গা পেলে জুমুয়া'র নামাজের জন্য কিছুক্ষণ গাড়ি থামাতে হবে।'
: 'দুঃখিত, পথে সেই দুপুরের খাবারের জন্য চৌদ্দগ্রামে ছাড়া গাড়ি থামবে না।'
: 'তাতে তো অনেক দেরী হয়ে যাবে। এখনো তো অনেক দূর?'
: ' কি করব বলুন, দু'বার তো আর যাত্রাবিরতি করা সম্ভব নয়। এমনিতেই জ্যামে অনেক দেরী হয়ে গেছে।'
মাহমুদ চিন্তা করে। সে একা। আরো যদি কয়েকজনকে পাওয়া যেতো, তবে না হয় জোর করা যেতো। পিছনের যাত্রীদের দিকে তাকায়। মুরব্বী কিছিমের কয়েকজন রয়েছেন। ওনারা কি ওকে সমর্থন দিবে? চলার পথে মাহমুদ অনেক দেখেছে, ভালো তথা ধর্মীয় কাজে সমর্থন দেবার লোকের খুবই অভাব। কিন্তু যদি বলা হয়, ভাই এই গানটা চেঞ্জ করে ঐটা লাগান, পক্ষে সমর্থন দেবার লোকের অভাব হবে না। বিপক্ষে মনে হয় একজনও থাকবে না।
উঠে দাঁড়ায় মাহমুদ। ক্যানভাসারদের মত মনে হয় নিজেকে। একটু হাসে মনে মনে। হ্যা, সে এখন পরম করুণাময়ের পক্ষ থেকে নামাজের ক্যানভাস করতেই যাচ্ছে। মুরব্বীদের দিকে তাকিয়ে সে বলল,
: আমি জুমুয়া'র নামাজ আদায় করতে চাই। আমার সাথে আর কে কে আছেন?
পিছন থেকে একজন যুবক এবং একজন মুরব্বী উঠে দাঁড়ান। ৪৫ জন যাত্রীর ভিতরে মাত্র তিনজন!? একটু খারাপ লাগে মাহমুদের কাছে। তবে ওকে অবাক করে দিয়ে ওর পাশের সীটের ছেলেটিও আওয়াজ দেয় যে, সে ও পড়তে চায়।
এই সময় মৃদু গুঞ্জন উঠে বাসের ভিতরে। মাহমুদের একটু আগের 'একটু খারাপ লাগা'কে আরো 'বেশী লাগাতে' পরিণত করতেই যেন কিছু তীর্যক মন্তব্য ওর কানে আসে। যেমন-
' এমনিতেই জ্যামে কত সময় গ্যাছে... থামার দরকার নাই'
' এক্কেরে পাক্কা হুজুর আইছে... সফরে মুসাফিরের নামাজ খাবার হোটেলে গাড়ি থামলেই আদায় করে নিলেই তো হয়...'
' ড্রাইভার সাহেব, যেভাবে চালাইতাছেন, আগামীকাল সকাল ছাড়া তো বাড়ি পৌছাইতে পারুম না... আর একজন জুমার জন্য পাগল হইছে...'
কি বলবে ভাবছে মাহমুদ। এই লোকগুলো যার যার অনুভূতি ব্যক্ত করছে। তবে এরা সবাই মুসলমান, নামাজের বিরোধিতাও কেউ করছে না। এবার একটু চিন্তায় পড়ে যায় মাহমুদ। সে ইসলামী শরিয়তের এই বিষয়ে কি হুকুম রয়েছে জানে না। তবে কছরের নামাজ সম্পর্কে সে জানে। কিন্তু জুমুয়া'র ব্যাপারে কি নির্দেশ , সহীহ ভাবে জানে না। এজন্যই ড্রাইভারকে জোরও করতে পারছে না।
কিন্তু পথে পথে মসজিদ। একেবারে মুখে মুখে যে কোনো একতায় পাশে মিনিট বিশের জন্য থামলে কি হয়? বিশ মিনিটের জন্য তো আর বিশাল কোণ ক্ষতি হয়ে যাবে না। আর লঞ্চ, ট্রেন বা উড়োজাহাজে জার্ণি করলে তখন আলাদা কথা ছিল। কিন্তু বাস তো মসজিদের পাশে থামতেই পারে। অনেক সময় ড্রাইভার/যাত্রীরা নিজেদের প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্যও গাড়ি থামায়। তবে আজ সে জুমুয়া' আদায় করতে চাইলে কেন নয়?
এবার মাহমুদ ড্রাইভারের কাছে গিয়ে খুবই নরম ভাবে বলে,
: ড্রাইভার সাহেব, একটা বিশে জামাত শুরু হবে। এখন একটা বাজার পাঁচ মিনিট বাকী আছে। আপনি কি মিনিট বিশের জন্য একটা মসজিদের পাশে বাসটা থামাবেন? আর যদি না-ই থামান, তবে আমাকে সময়মত একটা মসজিদের পাশে নামিয়ে দিয়ে বাস নিয়ে চলে যান। আমি নামাজ আদায় করে যেভাবে পারি ফিরবো।
ড্রাইভার সাহেব লুকিং গ্লাসে মাহমুদকে দেখে। অবাক হয়। একটু হাসে। এরকম মানুষ সে খুবই কম দেখেছে। মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানায়। হাসিমুখে মাহমুদ নিজের সীটে ফিরে যায়।
অন্যান্য যাত্রীদের প্রচন্ড আপত্তির মুখেও ড্রাইভার সাহেব একটি মসজিদের পাশে বাস থামায়। সেখানে আরো দু'টি বাস অপেক্ষা করছে। সেই বাসের যাত্রীরাও এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে থেমেছে।
শেষপর্যন্ত মাহমুদ জুমুয়া'র নামাজ আদায় করে প্রশান্ত মনে বাসে ফিরে আসে। কিন্তু বাসে মহিলা ও শিশুরা ছাড়া অন্য যাত্রীরা কেউ নেই। জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় মাহমুদ। ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ওদের বাসের যাত্রীরা কেউ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করছে... কেউ গাছের নীচে দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলছে... কেউ চা'র দোকানে চা খাচ্ছে... কেউ সিগ্রেটে কষে টান দিচ্ছে... একটা হোটেল মত রয়েছে। কয়েকজনকে সেখান থেকে বের হতে দেখল মাহমুদ।
এরা সবাই শেষ পর্যন্ত বাস থামায় নীচে নেমে যার যার মত ঘুরে বেড়ালো। কিন্তু জুমুয়া'র নামাজটি আদায় করল না।
সকলে চলে আসার পরেও দু'জন ফিরে নাই দেখে বাস ছাড়া যায় না। সুপারভাইজার নেমে তাদেরকে খুঁজতে যায়। আরো কিছুক্ষণ সময় অলস পার হয়। এবার ড্রাইভারও বিরক্ত হয়। সবাইকে বিরক্তির চরমসীমায় পাঠিয়ে দিয়ে অবশেষে যখন সেই 'পলাতক' দুজনের দেখা পাওয়া গেল, মাহমুদ এদেরকে দেখে একটু অবাক হয়। এই দুজনই সব থেকে বেশী বাস না থামানোর জন্য বিরোধীতা করেছিল! সুপারভাইজার এসে জানালো এই দু'জনকে পাশের একটি পাবলিক টয়লেটের সামনে থেকে পাওয়া গেছে। ওখানে কি করছিল একজন জানতে চাইলে, অন্য একজন হেসে জানায় , 'বড়টার বেগ লেগেছিল মনে হচ্ছে।'
উপরের গল্পটি এখানেই শেষ। এখন ভাবার বিষয় রয়েছে, মাহমুদ কি মুসাফির অবস্থায় জুমুয়া'র নামাজ আদায় করার জন্য একটু বেশী-ই তৎপরতা দেখিয়েছে? এ ব্যাপারে আমাদের শরীয়তের বিধান কি? অন্যরাও যারা বিরোধিতা করেছে, তারাও কি ঠিক ছিল? আমার ইসলামী জ্ঞান প্রায় নেই বললেই চলে। তাই শরীয়তের অভিজ্ঞজনের নিকট আবেদন রইলো এই ব্যাপারটি একটু খোলাসা করে মন্তব্যে আলোচনা করার জন্য। তাতে আমার মত আরো অনেকেই উপকৃত হবে বলে আশা করছি। আর নেট ঘেটে আমি যা পেয়েছি, রেফারেন্স হিসেবে সেটিও সংযুক্তি হিসেবে দিয়ে দিলামঃ-
Reference:
Question: What is the ruling on Jumuah for the traveller?
Could we leave Shalat Jumu'ah (Friday
praying) when we 're travelling (musafir)?
Answer Given by:
Sheikh Muhammed Salih Al-Munajjid
Praise be to Allaah.
Salaat al-Jumu’ah (Friday prayer) is not
obligatory on the traveller. This is the
opinion of the majority of scholars,
including the followers of the four schools
of Abu Haneefah, Maalik, al-Shaafa’i and
Ahmad… Shaykh al-Islam Ibn Taymiyah
(may Allaah have mercy on him) said in al-
Fataawa (24/178): “The correct opinion,
without a doubt… is that this (Jumu’ah and
Eid prayers) are not obligatory for the
traveller. The Messenger of Allaah (peace
and blessings of Allaah be upon him) used
to travel frequently: he performed ‘Umrah
three times, besides the ‘Umrah he
performed along with Hajj. He performed
his Farewell Pilgrimage accompanied by
thousands upon thousands of people, and
he went on more than twenty military
campaigns, but there are no reports at all
that say he prayed Jumu’ah or Eid prayers
when travelling; he just prayed two rak’ahs
[i.e., shortened prayers] as on all the other
days. There are also no reports that say he
preached a khutbah on a Friday when he
was travelling, neither standing on his own
two feet or from atop his camel, as he used
to do on Eid, or from a minbar, as he used
to do on Fridays. He occasionally used to
deliver an address to the people when he
was travelling, and this was narrated by
them… but no-one reported that he
delivered a khutbah to them before prayer
on a Friday whilst travelling, and no-one
reported that he recited Qur’aan aloud on a
Friday (i.e., during Salat al-Zuhr, on a
journey). Of course, if he had done
something out of the ordinary and recited
aloud or delivered a khutbah, they would
have reported it. On the Day of ‘Arafaah, he
delivered a khutbah, then he came down
and led them in a two-rak’ah prayer, but no
one reported that he recited aloud in that
prayer. That khutbah was not for Jumu’ah
– because if it had been for Jumu’ah, he
would have done the same (delivered a
khutbah) on every other Friday (when he
was travelling); that khutbah was given
because it was part of the rituals (of Hajj).
Hence all the Muslim scholars said that he
would have given a khutbah at ‘Arafaah
even if it had not been a Friday. This
mutawaatir report proves that it was a
khutbah for the Day of ‘Arafaah, not for
Friday.”
From the above we know that Jumu’ah is
not obligatory for the traveller, all that he
has to do is to pray Zuhr. However, if he
prays Jumu’ah with the people of the place
he is visiting, this is OK. It says in al-Sharh
al-Kabeer (2/154): “Whoever of these
people – travellers, slaves and women –
attends Jumu’ah, does not have to pray
Zuhr, and we know of no dispute on this
point. Their exemption from having to
attend Jumu’ah is to make things easy for
them, but if they attend, it is OK, as is the
case with the sick person. It is preferable
for the traveller to attend Jumu’ah, because
this is better, and is on the safe side
(because some scholars think that
Jumu’ah is obligatory for the traveller who
is staying in a particular place, but not for
the traveller who is on the road), as he
comes under the general meaning of the
aayah (interpretation of the meaning): “O
you who believe! When the call is
proclaimed for the Salaah on the Day of
Friday (Jumu’ah prayer), come to the
remembrance of Allaah, and leave off
business (and every other thing), that is
better for you, if you did but know!” [al-
Jumu’ah 62:9].
We have already stated that the majority of
scholars say that generally speaking it is
not obligatory. And Allaah knows best.
বিষয়: বিবিধ
১২৬২ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মূলত আপনার উৎসাহেই এই লিখাটির সাহস করা। এখন দেখা যাক আমাদের শ্রদ্ধেয়/শ্রদ্ধেয়া সিনিয়র ব্লগারেরা আমাদেরকে যথাযথ উত্তর প্রদানে এগিয়ে আসেন কিনা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
Sheikh Muhammed Salih Al-Munajjid
যে জবাব দিয়েছেন তা যথার্থ!
হাদিসে বলা হয়েছে- (সারাংশ)
সফর হলো আযাবের অংশবিশেষ, এটা যত তাড়াতাড়ি শেষ করা যায় ততই উত্তম!
আমাদের দেশের বাস্তবতায় জুমআয় অংশগ্রহনের জন্য আপনার কাজটি "উত্তম হয়েছে" বলার মত জোরালো কোন যুক্তি বা দলিল পেলামনা!
বরং কিছু অবাধ্য লোকের অবাধ্যতা জনসমক্ষে উতকটভাবে প্রকাশ করে দিয়েছে- যা পরবর্তীকালে তাদের আরো উদ্ধত হতে উদ্বুদ্ধ ও সংগঠিত করে তুলতে পারে এবং সেটা আরো বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে!!
আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন!
আপনার জবারের অপেক্ষায় ছিলাম।
সুন্দরভাবে উত্তর দেবার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। জাজাকাল্লাহু খাইর।
আবার ফিরে এলাম, আমি ঠিক বুঝতে পারি নাই, আপনার মন্তব্যের শেষাংশের কথাগুলো [ আমাদের দেশের .... কারণ হতে পারে!!] এই কথাগুলো।
আমি কিন্তু লিখাটি সফরে জুমুয়া'র নামাজ পড়তেই হবে ভেবে পোষ্টটি দেই নাই। এখানে এরকম মানূষেরা রয়েছে, যারা চলার পথে এমনটি করেন। আমি অণ্যদের পক্ষ থেকে কেবল জানতে চেয়েছিলাম, আসল মাসয়ালা (কোরান/হাদীসের আলোকে)কি।
এখন আপনার বক্তব্য থেকে কিছুতা জানলাম। দেখি অন্যরা আরো কিছু রেফারেন্স এনে আমাদেরকে কি জানায়।
ধন্যবাদ আপনাকে।
জাজাকাল্লাহ।
এভাবেই সমাজের সকল স্তরে ইসলামী অনুশাসন ও সংস্কৃতিকে বিতর্কিত ও নিগৃহীত করা ওদের পূরণো কৌশল; এসব দিকেও একজন সমাজ-সচেতন মুসলিমের খেয়াল রাখা প্রয়োজন!
আপনার উল্লেখিত পয়েন্টটি আমি অনুধাবন করতে পেরেছি।
ইনশা আল্লাহ সামনে থেকে আর সচেতন হব।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ভালো তথা ধর্মীয় কাজে সমর্থন দেবার লোকের খুবই অভাব। কিন্তু যদি বলা হয়, ভাই এই গানটা চেঞ্জ করে ঐটা লাগান, পক্ষে সমর্থন দেবার লোকের অভাব হবে না। বিপক্ষে মনে হয় একজনও থাকবে না।
একেবারে বাস্তব কথাটিই বলেছেন, এমনটাই হয়ে থাকে।
সুন্দর ভাবে রেফারেন্স দিলেন। জ্ঞান সমৃদ্ধ হল।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সফরে জুমার বাধ্যবাধকতা নাই। ওয়াক্তিয়া নামাজ ও দেরি করার সুযোগ আছে। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের বেশিরভাগ বাস সার্ভিস মাগরিব এবং জুমার সময় কোন মসজিদে থামায়। এতে কোন অসুবিধা আঝে বলে মনে হয়না। আমার অভিজ্ঞতায় এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি বাস থামানয় কেউ আপত্তি করেছে।
মন্তব্যের জন্য শুকরিয়া।
মাহমুদ সাহেব মনে হয় 'বেশিরভাগ বাস সার্ভিসের' বাইরে অন্যটিতে চড়েছিলেন।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
গল্পে গল্পে বিষয়টি পড়ে খুব ভালো লাগলো! Sheikh Muhammed Salih Al-Munajjid রাহিঃ অনেক বড় মাপের স্কলার! উনি অথেনটিক হাদিসের আলোকে জবাব দেন আলহামদুলিল্লাহ । উনার ফতোয়ার পর আর কিছু সংযোজনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না!
তবে মুসাফির অবস্হায় আল্লাহ আমাদের বিশেষ কিছু ছাড় দিয়েছেন যেমন- ওয়াক্তের সালাত ফজর বাদে জোহর আসর একসাথে কসর আবার মাগরিব ইশা একসাথে কসর করা, মুজার উপর মাসেহ এর মেয়াদ তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত থাকা এ বিষয় গুলো আমাদের সবার একটু জানা থাকা জরুরী!
আমার আব্বু এবং ভাইয়াদের দেখেছি মুসাফির না হলে উনারা বাসে করেও কোথাও গেলে নামাজের সময় গুলোতে বাস থেকে নেমে যেতেন, নামাজ পড়েই আবার বাস ধরতেন!
শুকরিয়া ভাই আপনাকে!
আপনার মন্তব্য আমার জ্ঞান ভান্ডারকে আর সমৃদ্ধ করল।
আপনার আব্বু এবং ভাইয়া সঠিক কাজটি করতেন।
সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক শুকরিয়া।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
শুরুতেই অসাধারণ লেখনীর জন্যে জাযাকাল্লাহ ও অনেক ধন্যবাদ মামুন ভাই.....।
"সফর হল আজাবের অংশ।"
পবিত্র কোরানে আরো ইরশাদ হচ্ছে- "তোমরা জমিনে ভ্রমন করে মহান আল্লাহর অভাবনীয় বিষয়াবলী অনুধাবন কর।"
সহজতা ইসলামের সহজাত বিষয়,কঠোরতা নয়।এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ 'মুসাফিরের জন্যে অনেক বিষয়ে ছাড় দেয়া।'
কিছুটা আলোকপাত করছি মুসাফিরের বিষয়ে-
নূন্যতম ৪৮মাইল(কিঃমিঃ হিসেবে৭৮ প্রায়) রাস্তা অনুর্ধ১৫দিনের ভ্রমনের নিয়তে- তা যে কোন কাজেই হোক,ব্যক্তি স্বীয় এলাকা অতিক্রম করলেই শরিয়তে সে মুকিম থেকে মুসাফিরের হুকুমে গণ্য হবে।
মুসাফিরের হুকুমঃ-
ফরজ নামাজ ২রাকাত আদায় করবে। তবে মুকিম ইমামের পিছনে ৪রাকাত ই পড়বে।
জুমা-সুন্নাত-নফল ইত্যাদি বিষয়ে ছাড় থাকবে, আদায় করা-না করা ব্যক্তির ইচ্ছাধীন,আদায় করলে ভাল ই,না করলেও অসুবিধা নাই।
প্রয়োজন মনে করলে 'রোজা' না রেখে পরে কাজা আদায় করতে কোন অসুবিধা নাই।
৩দিন পর্যন্ত মোজার উপর মাসেহ করে চলতে পারবে।
বাসযাত্রীদের বিরুপ মন্তব্য দ্বীনী দৈন্যতার বহিঃপ্রকাশ বৈ কিছু নয়।এতে সমাজে ধর্মহীনতার কুপ্রভাব ফুটে উঠেছে। যা ঈমান নিয়েই প্রশ্ন তোলার অবকাশ দেয়।সাবধান হতে হবে সবার।
একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে-
শরয়ী কোন বিষয় আদায় না করলে তার জন্যে শাস্তি পেয়ে মুক্তির সম্ভাবনা আছে পরকালে,কিন্তু তা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করলে ঈমানহারা হওয়ার বেশী সম্ভাবনা। শরয়ী ফরজ কে অস্বীকার তো সুস্পষ্ট কুফুরী।
আল্লাহ আমাদের কে হেদায়েত দিন, আমিন।
আপনার যথার্থ পয়েন্টগুলো আমার মত অনভিজ্ঞ মুসলিমদের কাজে আসবে ইনশা আল্লাহ।
আর বিরূপ মন্তব্যের ব্যাপারে আপনার সাথে একমত।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
প্রয়োজনীয় এমন দ্বীনী বিষয়ে অসাধারণ নান্দনিকতা পূর্ণ হ্রদয়গ্রাহী 'লেখনী' আরো বেশী বেশী চাই।
আল্লাহ আপনাকে-আমাদের কে কবুল করুন এই দোয়া মহান রবের কাছে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন